রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই কিয়েভকে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহায়তা করে আসছে ওয়াশিংটন। সেই অনুযায়ী, ওয়াশিংটনের কাছে নতুন করে শক্তিশালী গ্রে ঈগল ড্রোন চেয়েছিল কিয়েভ। তবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এবার গ্রে ঈগল ড্রোন নিয়ে ইউক্রেনের অনুরোধ বাইডেনকে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন ১৬ মার্কিন সিনেটর।
খবর আল-জাজিরার।
প্রতিবেদনে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, ১৬ মার্কিন সিনেটর ইউক্রেনকে গ্রে ঈগল ড্রোন না দেওয়ার বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্তটিকে পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে কেন ইউক্রেনকে ড্রোন দেওয়া যাবে না তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
বাইডেন প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ওই ১৬ সিনেটর। যেখানে তারা ইউক্রেনকে কেন গ্রে ঈগল ড্রোন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন।
ড্রোনগুলোকে গুলি করে নামানো যেতে পারে ও সংঘর্ষ বাড়তে পারে এমন শঙ্কায় ইউক্রেনের অনুরোধ এখন পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করে আসছে বাইডেন প্রশাসন। গ্রে ঈগল ড্রোন ৮ হাজার ৮০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে ও ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় উড়তে পারে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালায় রাশিয়া। এরপরেই দুদেশের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে। সম্প্রতি পিছু হটলেও তথাকথিত ইরানের আত্মঘাতী কামিকাজ ড্রোন দিয়ে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। এমতাবস্থায় যুদ্ধে সুবিধা পেতে গ্রে ঈগল ড্রোন চেয়েছিল ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে মঙ্গলবার সকালে ক্রিমিয়ায় দুটি ড্রোন ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছেন শহরটির রুশ সমর্থিত গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ। তিনি বলেন, ‘আকাশ সীমানায় ড্রোনের উপস্থিতির টের পেয়েই রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেম চালু হয়ে যায়। ক্রিমিয়ার আকাশ সীমানা থেকে দুটি মানবহীন ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। আমাদের সকল বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ’
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আরও সহায়তা চেয়েছেন। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা করে শীতের তাপমাত্রাকে ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে রাশিয়া, এমন অভিযোগ করেছেন জেলেনস্কি।
ফ্রান্সের মেয়র অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে জেলেনস্কি বলেন, ‘ক্রেমলিন এই শীতের ঠাণ্ডাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্রে রূপান্তরিত করতে চায়। ’ এ সময় ফ্রেঞ্চ মেয়রদের অ্যাসোসিয়েশনকে জেনারেটর, জরুরি পরিষেবার যন্ত্রাংশ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠাতে অনুরোধ করেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনে সম্প্রতি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিমাণ বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই এ হামলা চলানো হচ্ছে। এর ফলে অনেকটা বিপর্যস্ত ইউক্রেন। রুশ বাহিনীর এসব হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু জ্বালানি অবকাঠামো। হামলার জেরে ইউক্রেনের অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র অকোজ হয়ে পড়েছে। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ ও সুপয়ে পানি ছাড়া রয়েছেন। এমতাবস্থায় পুনরুদ্ধারকৃত খেরসন ও মাইকোলাইভের বাসিন্দাদেরও সরিয়ে নিচ্ছে জেলেনস্কি প্রশাসন। মূলত শীত থেকে নাগরিকদের রক্ষায় এমনটি করছে তারা।